গাজার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলের হামলায় অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।রোববার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, শনিবার রাতে হামলায় দুটি আবাসিক বাড়ি ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।

ফিলিস্তিনের গাজায় হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলার পর এবার পানির পাম্পে হামলা করেছে ইসরাইল। গাজার জীবিতদের খাদ্য পানীয় বিদ্যুতের অভাবেই এখন মরার উপক্রম। এ পরিস্থিতিতে ইসরাইলকে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানিয়েছে আরব বিশ্ব। তুরস্কসহ আরও দেশ ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বন্ধ করেছে। ইসরাইল বাহিনীর গণহত্যার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ করেছে লাখো মানুষ।

প্রায় এক মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলা ও গত্যাযহ্ঝ চালাচ্ছে ইসরাইল। গাজার শরণার্থী শিবির, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স স্কুল-কলেজ, মসজিদ, গির্জা কোন স্থাপনায় বাদ যাচ্ছে না তাদের হামলা থেকে। শনিবার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে হামলায় নিহত হয়েছে ৫১ জন। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের কাছে গাজার প্রধান পানির পাম্পে বোমা মেরে গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। খাদ্য, পানীয়, বিদ্যুতের অভাবে জীবন সংকটে পড়েছে জীবিত ফিলিস্তিনিরা।

গাজার উত্তরাঞ্চলে অনবরত গোলাবর্ষণের কারণে আটকে পড়েছে বহু বেসামরিক নাগরিক। গাজার দক্ষিণাঞ্চলেও হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। এছাড়া অধিকৃত পশ্চিত তীরে ইসরাইলি সৈন্য ও বসতি স্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।

এদিকে, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আরব দেশগুলো। আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে গেলে তারা পরিস্কারভাবে এ আহবান জানান। তবু আমেরিকা বলছে, হামাসের হামলা থেকে ইসরাইলের আত্মরক্ষা করার অধিকার রয়েছে।

গাজায় হামলা অব্যাহত রাখায় ইসরাইলে নিযুক্ত নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে নিয়েছে তুরস্ক। পাশাপাশি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।

ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে দেশে দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। ইসরাইলকে সমর্থনের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কড়া সমালোচনা করেন বিক্ষোভকারীরা। এছাড়াও, বিক্ষোভ হচ্ছে লন্ডন, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

গেলো অক্টোবর থেকে ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে সাড়ে ৬ হাজ নারী ও শিশু।